বর্ষার মরসুম শেষের কথা ঘোষণা করেছে আবহাওয়া দফতর। আর সেই সঙ্গে রাজ্য জুড়ে শুরু হতে চলেছে রাস্তা মেরামতির জোর প্রস্তুতি। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের কাজে এ বার কোমর বেঁধে নামতে চলেছে রাজ্য সরকার। দফতরের হিসাব অনুযায়ী, এই বিপুল রাস্তার মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার পথ ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ (ডিএলপি)-এর আওতায় রয়েছে। অর্থাৎ, নির্মাণের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি রাস্তার কোনও ক্ষতি হয়, তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকেই নিতে হয়। পূর্ত দফতরের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, চলতি বর্ষায় প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতিপূরণে বর্ষা শেষে রাজ্য জুড়ে শুরু হবে মেরামতির ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।
দফতরের তরফে জারি করা নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিটি রাস্তার উপরের আস্তরণ বা ‘সারফেসের’ পুরুত্ব ন্যূনতম ৪০ মিলিমিটার হতে হবে। পাশাপাশি, তিন বছরের মধ্যে ওই রাস্তার কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে সেটি মেরামতের দায়ও ঠিকাদারকেই নিতে হবে। ডিএলপি-র আওতা বানানো হলে রাস্তার গুণমান ও স্থায়িত্ব— দুইই নিশ্চিত হবে, এমনটাই মনে করছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। নবান্ন সূত্রে আরও খবর, বর্ষা শেষ হতেই ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলির তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে মেরামতির কাজ শুরু হবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। সরকার আশা করছে, এ বছর আগেভাগে রক্ষণাবেক্ষণ শুরু হলে শীতের মধ্যে অধিকাংশ রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে তোলা যাবে।
তবে প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সব রাস্তা দ্রুত সারাই করতে চায় রাজ্য সরকার। কারণ, এ বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় যত বারই পূর্ত দফতর রাস্তা সরাইয়ের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে, তত বারই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে সুষ্ঠু ভাবে রাস্তাগুলি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। যেহেতু আগামী বছরের শুরুতেই রাজ্য বিধানসভা ভোটের দামামা বেড়ে যাবে, তাই ভোটের আগে রাজ্যের মানুষকে ভাল রাস্তা দেখিয়েই ভোট চাইবে রাজ্যের শাসকদল।