দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় অজয় নদের ধারে, কেঁপে উঠল গোটা এলাকা


অজয় নদ থেকে উদ্ধার হওয়া দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ব্যবহৃত মর্টার শেলটি নিষ্ক্রিয় করল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা। সেনাবাহিনীর জওয়ানরা প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সব দিক খতিয়ে দেখে শেলটিকে নিষ্ক্রিয় করেন। শেলটি নিস্ক্রিয় করার সময় কেঁপে ওঠে আশেপাশের এলাকা। তবে শেলটি নিষ্ক্রিয় হতেই আতঙ্ক অনেকটা দূর হল নদ সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দাদের।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর বোলপুর থানার সিঙ্গি গ্রাম পঞ্চায়েতের লাউডোহা গ্রাম সংলগ্ন অজয় নদের চরে পরে থাকতে দেখা যায় একটি মর্টার শেল। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে সেটিকে দেখে কৌতূহলবশত ভিড় জমালেও দ্রুতই আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এলাকা জুড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বোলপুর থানার পুলিশ। বস্তুটি বিপজ্জনক হতে পারে ভেবে পুলিশ সেটিকে নজরদারিতে রাখে। খবর দেওয়া হয় বোম্ব স্কোয়াড ও সেনাবাহিনীকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধাতব গোলাকার বস্তুটি সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি মর্টার শেল হতে পারে। ব্রিটিশ আমলে পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম সংলগ্ন এলাকায় সামরিক মহড়া হত বলে ধারণা। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার মর্টার শেল জানতে পেরে নজরদারি বাড়িয়ে দেয় বোলপুর থানার পুলিশ। প্রথম দিকে বম্ব স্কোয়াডের প্রতিনিধিরা শেলটিকে কীভাবে নিষ্ক্রিয় করা যাবে তার রাস্তা বের করত্তে পারেনি। বুধবার সকালে পানাগড় সেনা ছাউনি থেকে সেনা-জওয়ানের দল প্রথমে অজয় নদের চরে একটি খাল তৈরি করে। পরে বালির বস্তা দিয়ে ঘিরে রাখে বস্তুটি।

এরপর গর্ত করে শেলটি মাটির অনেক নিচে পুঁতে দেওয়া হয়। তারপর সেটিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এতদিন জলের মধ্যে পরে থাকার পরও নিষ্ক্রিয়করণের সময় বিকট শব্দ হয়। এমনকী আশপাশের এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। যা দেখে আতঙ্কিত হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন স্থানীয়রা।

বিশ্বভারতীর ভূগোল বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে ব্রিটিশ সেনাদের সামরিক মহড়ার জন্য এরকম সেল ব্যবহার করা হত। অজয় নদের বন্যার জলে বিভিন্ন সময়ে বহু বস্তু ভেসে এসেছে। তবে এটি সম্ভবত ব্রিটিশ সেনাদের সামরিক মহড়ার

 কোনও অস্ত্র বলেই মনে হয়েছে। বহু বছর বালির নিচে চাপা পড়ে থেকে ভেসে উঠেছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শনও ছিল। তবে এ ধরনের বহু জিনিস আগেও পাওয়া গিয়েছে।” শেলটি নিষ্ক্রিয় করার সময় কৌতূহলী হয়ে হাজির হন লাউদোহা গ্রামের বহু মানুষ। নিরাপত্তার কারণে কাউকে কাছাকাছি ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post