চন্দননগর, পশ্চিমবঙ্গের একটি ঐতিহাসিক শহর, প্রতি বছর শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় ব্যাপক ধুমধামে এবং শ্রদ্ধা-ভক্তিতে পূর্ণ হয়। এখানে হাজার হাজার মানুষ দুর্গা মায়ের পূজা এবং বিসর্জনে অংশগ্রহণ করেন। এবছরের দুর্গোৎসবেও চন্দননগর শহর জুড়ে অঙ্গীকার ছিল একটাই — দেবী মায়ের বিসর্জন হবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে, আর তার সাথে বিদ্যুৎ পরিষেবা নিশ্চিত রাখা হবে যাতে সবাই দুর্গাপূজা এবং বিসর্জনের সময় নিরাপদ ও সুবিধাজনক পরিবেশে উপভোগ করতে পারে।
চন্দননগরের শোভাযাত্রা, যেটি প্রতি বছরই নজর কাড়ে, এবছরও ছিল এক বিশাল অনুষ্ঠান। রাস্তায় রাস্তায় বর্ণিল আলোর ঝলকানি, সঙ্গীতের তালে নাচ, নানা ধরনের শোভাযাত্রা এবং মণ্ডপগুলিতে গড়ে ওঠা শিল্পকর্ম মানুষের মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এবছর এই শোভাযাত্রা আরও স্মরণীয় হয়ে উঠেছিল, কারণ শহর কর্তৃপক্ষ সফলভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা সচল রেখেছিল, যা এই ধরনের বিশাল অনুষ্ঠানকে নিরাপদ এবং সুষ্ঠু করার জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল।
বিদ্যুৎ পরিষেবা নিশ্চিত রাখা
দুর্গা বিসর্জন কিংবা শোভাযাত্রা আয়োজনের সময় বিদ্যুৎ সংযোগের সমস্যা সাধারণত একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তবে চন্দননগর পৌরসভা এবং বিদ্যুৎ বিভাগ একযোগে কাজ করে এই সমস্যা সমাধান করেছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগের উপরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়, যাতে শোভাযাত্রার সময় কোনও ধরনের বিভ্রাট না ঘটে।
এছাড়া, উৎসবের সময় নিরাপত্তা এবং শোভাযাত্রার স্থানে আলো জ্বালানোর জন্য অসংখ্য হালকা এবং আলোর ব্যবস্থা করা হয়, যা প্রাঙ্গণকে আলোকিত এবং জীবন্ত করে তোলে। পুরো শহর জুড়ে রয়েছে অস্থায়ী বিদ্যুৎ লাইন, যাতে কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যাহত না হয় এবং শোভাযাত্রার সময় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
শোভাযাত্রার ঐতিহ্য এবং সার্বজনীন অংশগ্রহণ
এমনকি বিদ্যুৎ পরিষেবা বজায় রাখা সত্ত্বেও, চন্দননগরের শোভাযাত্রার বৈশিষ্ট্য কখনও পরিবর্তিত হয়নি — এই বিশাল শোভাযাত্রা মানুষের একত্রিত হওয়ার এক অপূর্ব উদাহরণ। শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে মণ্ডপগুলো থেকে একে একে ভক্তরা দেবীর মূর্তি নিয়ে নাচগান, ঢাকঢোল বাজিয়ে বের হন, যা দৃশ্যটি এক অন্যরকম রূপ নেয়।
এবছরের বিসর্জন শোভাযাত্রায় ভক্তদের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ঢাক, বাদ্যযন্ত্র, এবং সঙ্গীত পরিবেশন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শিল্পী এবং ভক্তরা ধর্মীয় ভাবধারায় একত্রিত হয়ে, সমাজের সব স্তরের মানুষ একযোগে অংশ নেন।