কুলু: বিধ্বংসী রূপে ফের ধরা দিল প্রকৃতি। প্রচণ্ড বর্ষণে বিধ্বস্ত উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এর মধ্যে কুলুর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। একটানা ভারী বর্ষণে সেখানে বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছে বিপাশা নদীর জলস্তর (Heavy Rainfall)। শক্তি বাড়িয়ে এই মুহূর্তে ফুঁসছে বিপাশা। তার আক্রোশ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না স্থলভূমি। (Himachal Pradesh)
কুলু থেকে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে বিপাশার ভয়ঙ্কর রূপ সামনে এসেছে। তার প্রবল স্রোতের ধাক্কায় ৩ নম্বং জাতীয় সড়কের একাংশ ধসে গিয়েছে। খসে পড়েছে রাস্তার ধারের চাঙড়। বিপাশার তীব্র গর্জনই শুধু শোনা যাচ্ছে। জনমানুষের দেখা নেই।
বিপাশার ক্রোধ থেকে রক্ষা পায়নি মান্ডির পঞ্চবক্ত্রা মন্দিরও। ঘটনাস্থল থেকে যে দৃশ্য সামনে এসেছে, তাতে যতদূর চোখ যায় জলমগ্ন। পঞ্চবক্ত্রা মন্দিরের অর্ধেক জলের নীচে চলে গিয়েছে। আশপাশ জনশূন্য। শুধুই বিপাশার গর্জন শোনা যাচ্ছে।
হিমাচলের সর্বত্রই এমন পরিস্থিতি। জায়গায় জায়গায় ধস নেমেছে। ভেঙে পড়েছে বাড়িঘর। রাজ্যে সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ন’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। শিমলার কোটগড়ে বাড়ি ভেঙে পড়ে এক পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। কুলুতে ধস নেমে রাস্তার পাশে একটি অস্থায়ী বাড়ি ভেঙে পড়ে। তাতে এক মহিলা মারা গিয়েছেন।চাম্বার কাতিয়ান তেহসিলে ধসের কবলে জীবন্ত চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।
এর পাশাপাশি, গারওয়ালে ধসের মুখে পড়ে গাড়ি। তাতে তিন জন মারা গিয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও তিন জন। গাড়িতে মোট ১১ জন যাত্রী ছিলেন। পাঁচ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে তাঁদের মধ্যে থেকে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁরা।
কুলু এবং মানালি থেকে অটল টানেল এবং রোটাং যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত ৩৬ ঘণ্টায় সেখানে ১৩টি ধস এবং ন’টি হড়পা বানের ঘটনা সামনে এসেছে। যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে ৭৩৬ রাস্তায়। এমন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে এখনই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। ইরাবতী, চন্দ্রভাগা, শতদ্রু, বিপাশা, সব নদীর জলস্তরই বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।