আলোর উৎসবের আগে শোকের আবহ চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের পরিবারে। শনিবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন পরিচালকের স্ত্রী নীলাঞ্জনা ঘোষ। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। পরিচালক-জায়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কন্যা আনন্দী ঘোষ সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন, সে রকম কোনও অসুস্থতা ছিল না তাঁর। আচমকাই অঘটন ঘটেছে।
আনন্দী জানান, শুক্রবারও নীলাঞ্জনা সুস্থ ছিলেন। শরীরে কোনও সমস্যা বা অসুস্থতার লেশমাত্র ছিল না। বহু বছর ধরে কাঁথাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নীলাঞ্জনা। তাঁর মহিলাকর্মীদের সঙ্গে ওই দিন দুপুরেও কাজ করেন তিনি। কাজ করতে করতেই শরীরে অস্বস্তি শুরু হয় তাঁর। তড়িঘড়ি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। চিকিৎসকেরা জানান, আচমকা ‘অ্যানিওরিজ়ম’-এর কারণে পরিচালক-পত্নীর শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এর থেকেই মৃত্যু তাঁর।আনন্দীর কথায়, “মায়ের শরীরে অস্বস্তি শুরু হওয়ার পর আমরা আর দেরি করিনি। চিকিৎসকেরা মাকে সুস্থ করতে অস্ত্রোপচারের কথাও বলেছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তার আগেই সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল।” নীলাঞ্জনার মৃত্যুর খবর ছড়াতেই গৌতমকে সমবেদনা জানাতে বেসরকারি হাসপাতালে একে একে জড়ো হচ্ছেন বাংলা বিনোদনদুনিয়ার খ্যাতনামীরা।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় লিখেছেন, “আমার প্রিয় নীলাঞ্জনা ঘোষের মৃত্যুতে আমি শোকগ্রস্ত বোধ করছি। আমার বৌদি, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের স্ত্রী— তাঁর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল এবং আমি বিচলিত বোধ করছি।” শোকবার্তায় তিনি আরও লেখেন, নানা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন নীলাঞ্জনা। তাঁর হাতের কাঁথাশিল্পের কাজ দেখার মতো ছিল। সে সব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি এও লেখেন, “গৌতমদাকে সান্ত্বনা জানানোর কোনও ভাষা আমার জানা নেই। তবু তাঁকে মন শান্ত রেখে তাঁর কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করব। বৌদির কথা মনে রেখেই এই কাজ তাঁকে করতে হবে।”
নীলাঞ্জনা-কন্যা আনন্দী আরও জানিয়েছেন, শনিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে তাঁর মায়ের দেহ নিয়ে আসা হবে। পরিচালক-পত্নীর স্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।