জুবিনের মৃত্যুর দেড়মাসের মধ্যেই ফের শোকস্তব্ধ অসম, বংশীবাদক দীপকের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন মুখ্যমন্ত্রীর


দিনটা ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর। থমকে গিয়েছিল প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের কণ্ঠ। সিঙ্গাপুরে শো করতে গিয়ে আর ফেরা হয়নি তাঁর। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মিউজিক ম্যাস্ট্রো জুবিন গর্গ। দেড় মাসের মধ্যেই ফের অসমের বুকে শোকের ছায়া। আরও এক প্রতিভাকে হারাল অসম। প্রয়াত বিশিষ্ট বংশীবাদক দীপক শর্মা। মাত্র ৫৭ বছর বয়সে না ফেরার দেশে শিল্পী। সোমবার, ৩ নভেম্বর ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে তিনি চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানা গিয়েছে। গত মাসে গুয়াহাটির একটি হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চেন্নাইয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না।

তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল। দীপক শর্মার জীবনাবসানে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এক্স হ্যান্ডেলে প্রয়াত শিল্পীর ছবি শেয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী শোকবার্তায় লিখেছেন, 'অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি প্রখ্যাত বাঁশিবাদক দীপক শর্মার অকালপ্রয়াণ ঘটেছে। তিনি অসমীয়া সংগীতে অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং বাঁশিকে জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শোকসন্তপ্ত পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। ওঁম শান্তি।' 

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দীপক শর্মা ফেসবুকে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট করেন। লিভারে অস্ত্রোপচার খুবই ব্যায়বহুল। সেই জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন জানান। তিনি লিখেছিলেন, হায়দরাবাদে চিকিৎসা চলছে কিন্তু চিকিৎসার খরচ বহনের জন্য জনসাধারণের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাঁচার যে প্রবল ইচ্ছেশক্তি এবং বাঁশি বাজানোর অদম্য উৎসাহকে সামনে রেখে দীপক লিখেছিলেন, 'আমি নিশ্চিত আমি আবারও আমার হাতে বাঁশি নিতে পারব। আপনাদের আর্থিক সহযোগিতায় আমি আবারও বাঁশি বাজাতে পারব বলে আশা রাখি।' চিকিৎসার খরচের ভার লাঘব করতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিলেন।

১৯৬৮ সালে নলবাড়ি জেলার পানীগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দীপক শর্মা। বাঁশির প্রতি তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ও গভীর অনুরাগের জন্য তিনি অসম তথা সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর মৃত্যু অসমীয়া সংগীতজগতে একটি যুগের অবসান ঘটালো সে কথা বলাইবাহুল্য। অনুরাগীরা চিরকাল তাঁর বাঁশির সুর ও সংগীতের প্রতি অমলিন ভালোবাসা স্মৃতিতে রাখবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post